কী এই মাঙ্গলিক দোষ ?
জ্যোতিষের ভাষায়, কারোও রাশিফলের চতুর্থ ভাব, সপ্তম ভাব, অষ্টম ভাব ও দ্বাদশ ভাবে মঙ্গলগ্রহের প্রভাব থাকলে সেই ছেলে বা মেয়েটি মাঙ্গলিক দোষ পেয়েছে বলে মনে করা হয়। এই দোষ সাধারণত বিবাহ পরবর্তী জীবনে সমস্যার সৃষ্টি করে। কিছু মানুষ আবার প্রচলিত ধ্যানধারণাগুলি বলে এই দোষের ছেলে বা মেয়েকে রীতিমতো ভয় ধরিয়ে দেয়।
মাঙ্গলিক দোষ আর প্রচলিত ধারণা
- মাঙ্গলিক ছেলে বা মেয়ের বিবাহ পরবর্তী জীবন সুখের হয় না। তাদের সম্পর্কে অনেক সমস্যা আসে এমনকি ভেঙেও যেতে পারে।
- প্রচলিত আছে, মেয়ে মাঙ্গলিক হলে তাকে একটি গাছের সঙ্গে বিয়ে করতে হয় প্রথমে। এটা সঠিক নয়।
- শনি ও মঙ্গলের দশা কখনোই নাকি কাটানো যায় না। এই ধারণাও ভ্রান্ত।
- কথিত আছে, ২৭ বছর বয়সের পর আপনি আপনি কেটে যায় এই মঙ্গল দশা। এটাও সঠিক না।
কী এই বিবাহ যোগ ?
১) জন্মকুণ্ডলীতে মঙ্গল যদি সপ্তম ভাবে থাকে তাহলে জাতক-জাতিকার প্রেম বিবাহ হয়।
২) পঞ্চম-ভাবের অধিপতির সপ্তম-ভাবের সঙ্গে অথবা সপ্তম-ভাবে স্থিত গ্রহের সঙ্গে সম্বন্ধ থাকে তাহলে জাতক-জাতিকার প্রেম বিবাহ হয়।
৩) শুক্র এবং বৃহস্পতির সম্বন্ধিত যোগ জাতকের আধ্যাত্মিক প্রেম যোগ তৈরি করে।
কারোর জীবনে রাহুর মহাদশা ১৮ বছর ধরে চলতে পারে। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী রাহু হল শয়তান গ্রহ। বিশেষ করে কোনও কোনও গ্রহ বা নক্ষত্রের সংস্পর্শ এলে রাহুর প্রভাব অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। শনি, মঙ্গল এবং রবিব প্রভাবে রাহুর দশা জাতকের জীবনে ভয়াবহ প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আবার বৃশ্চিক বা ধনু রাশিতে অবস্থান করলেও রাহুর প্রভাব অত্যন্ত হানিকর হয়ে ওঠে।
* লগ্নে রাহুর প্রভাব থাকলে একের পর এক প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যায়। কারোর সঙ্গেই স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হয় না।
* রাহুর প্রভাব ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে অমনোযোগিতা বাড়ে। সারা বছর পড়াশোনা না করে পরীক্ষার আগে কোনও মতে পাশ করার চেষ্টা করে এরা।
* রাহুর মহাদশা চললে অকারণে প্রচুর মিথ্যে কথা বলে সেই ব্যক্তি। সব সময় এদের মাথা গরম থাকে।
শনির সাড়ে সাতি দশা চলছে শুনলে অনেকেই হতাশায় ভেঙে পড়েন। কারণ, জীবনের সাড়ে সাত বছর এই সাড়ে সাতি দশা মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে দেয়। শনির সাড়ে সাতি দশা সাধারণত শারীরিক, মানসিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটায়। গুরুজনদের স্বাস্থ্য সঙ্কট-সহ নানা রকম সমস্যা এনে দেয়। শনি গ্রহ যখন জন্মকালীন চন্দ্ররাশির দ্বাদশ, প্রথম ও দ্বিতীয় ঘর অতিক্রম করে এ সময়কালকে শনির সাড়ে সাতি বলা হয়। রাশিচক্রে শনি একেক রাশি অতিক্রম করতে সময় লাগে আড়াই বছর। তিনটি রাশি অতিক্রম করতে সময় লাগে মোট সাড়ে সাত বছর। সে জন্যই একে শনির ‘সাড়ে সাতি’ বলা হয়।
সাধারণত জাতক-জাতিকার জন্ম কুণ্ডলিতে এই সাড়ে সাতি তিনবার পরিক্রম করে (বাল্যকালে, যৌবনকালে ও বৃদ্ধ বয়সে)। প্রথম সাড়ে সাতি শিক্ষায় সঙ্কট এবং পিতামাতাকে কষ্ট দেয়। দ্বিতীয় সাড়ে সাতি জীবিকা ও অর্থ সংকট এনে দেয়, পরিবারে শান্তি বিঘ্নিত করে। প্রেম, ভালবাসা ও দাম্পত্য জীবনকেও প্রভাবিত করে। তৃতীয় অর্থাৎ শেষ সাড়ে সাতি শরীর-স্বাস্থ্য, গুরুজনদের মৃত্যু পর্যন্ত এনে দেয়।